কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন
কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন এটা নিয়ে কি আপনি চিন্তিত। এবং এটা নিয়ে আপনি অনেক খুঁজাখুঁজি করেছেন ,কিন্তু সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না। তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই, আজকে আমুরা আলোচনা করেছি কীভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন তার সেরা ১০টি টিপস নিয়ে।
শুধু তাই না প্রিয় পাঠক আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি আরও জানতে পারবেন আমাদের জীবনে স্মার্টনেস কেন প্রয়োজন। আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়লে আপনি নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে পারবেন। তাহলে আর দেরি কিসের চলুন মূল আলোচনায় যায়।
ভূমিকা
বর্তমান সময়ে স্মার্ট হওয়া খুবই জরুলি। সমাজের সাথে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের স্মার্ট হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। এমন কি কি গুন থাকলে আপনি নিজেকে স্মাট বলতে পারবেন। এগুলো জানতে হলে আপনাকে প্রথমে যেটি জানতে হবে সেটা হচ্ছে স্মারটনেস শব্দটির প্রকৃত মানে বা স্মার্টনেস বলতে কি বুঝায়।
আরও পড়ুনঃ সিঙ্গেলদের ভালোবাসা দিবস উদযাপনের ১০টি উপায়
আপনার কাজের ভিতরে এমন কিছু গুন থাকতে হবে যেগুলো দ্বারা মানুষ আপনাকে স্মার্ট হলে গন্য করবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেসব গুল কি কি এবং কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন।
স্মার্ট কাকে বলে
স্মার্ট একটি ইংরেজি শব্দ এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বুদ্ধিমান, রসবোধ-পূর্ণ, উজ্জ্বল, পরিচ্ছন্ন ও সু-বেশধারী, চটপটে, দ্রুত যেকোনো কঠিন পরিস্থিতি সঠিক চিন্তা করতে সক্ষম ইত্যাদি। আমাদের মাঝে অনেকেই মনে করে দামি পোশাক পরে দামি গাড়ি নিয়ে ঘুরে যে ব্যাক্তি মানুষকে দেখিয়ে বেড়াই তারাই স্মার্ট কিন্তু মানুষের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
অনেকেই মনে করে শো অফ করা মানেই সে স্মার্ট। আবার অনেকেই মনে করে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে আপডেট রাখলেই তাকে স্মার্ট বলে। এক কথায় বুদ্ধিমান, বিচক্ষণ এবং যুগের সাথে নিজেকে আপডেট রাখাটাই স্মার্টনেস এবং যে ব্যাক্তি নিজেকে আপডেট রাখতে পারে তাকে স্মার্ট বলে। কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
স্মার্টনেস বলতে আমরা কি বুঝি?
স্মার্টনেস কি এই বিষয়টি হয়তো আমরা অনেকেই জানি। আবার অনেকেই আছে যারা গ্রামে থাকে তারা এটা সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় বিভিন্নভাবে বুঝে। কখন কোথায় কোন কথা বলতে হবে তা সঠিকভাবে রপ্ত করা স্মার্টনেসের একটা উদহারন মাত্র। কখনো কারও সাথে প্রয়োজনের বেশি কথা না বলা।
যোগ্যতা বুঝে সবাইকে মূল্যায়ন করা। যখন আপনাকে কোনো কাজ দেওয়া হবে তখন সময়ের কাজ সময়ে শেষ করা। অনেক বই পড়া এবং জ্ঞান বা নিজের অভিজ্ঞতা বাড়ানো। কিছু সামাজিক আচরণ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা এবং সেগুলো মেনে চলা।
স্মার্টনেসের প্রয়োজনীয়তা
বর্তমান সময়ে স্মার্টনেসের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। সমাজে মানুষের কাছে মূল্যায়নের পাওয়ার জন্য স্মার্ট হওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন কাজের জন্য আমাদের বিভিন্ন ধরণের অফিস আদালত যেতে হয়। সেখানে অনেক মানুষের সাথে চলা ফেরা করতে হয় কথা বলতে হয়।
আরও পরুনঃ মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সেরা ১২টি উপায়
সেখানে যদি আপনি মার্জিত ভাষায় কথা না বলতে পারেন অথবা আপনি যদি সঠিক ভাবে তাদের কাছে তথ্য না দিতে পারেন তাহলে আপনি সেখানে কোনো মূল্যায়ন পাবেন না। তাই সমাজে বসবাস করতে হলে আপনি মার্জিত ভাষায় কথা বলতে হবে। এবং নিজেকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন?
নতুন কিছু শিখে বর্তমানের সাথে নিজেকে আপডেট করাকেই স্মার্ট বলে। যুগের সাথে যারা তাল মিলিয়ে চলতে না পারে তাদের ব্যাকডেটেড বলে ধরা হয়। কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন তার কিছু কৌশল নিচে দেওয়া হলোঃ
- নিজের মনকে শান্ত রাখুন
- যুক্তি দিয়ে কথা বলুন
- নিজের শরীরকে সুস্থ রাখুন
- বই পড়ুন
- সাহায্য করার মানসিকতা
- নতুন নতুন ইনফরমেশন নিন
- জামা কাপড়ের সেন্স রাখুন
- অন্য ব্যক্তিকে সাহায্য করুন
- সর্বদা যে কোন ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকুন
- সময়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিন
- সর্বদা পজিটিভ থাকুন
- সর্বদা মুখের হাসি বজায় রাখুন
- অন্যদের গালি দেওয়া ও ছোট করা থেকে দূরে থাকুন।
মেয়েদের কাছে স্মার্ট হওয়ার উপায়
অনেকেই আছে যারা মেয়েদের কাছে হিরো সাজতে চাই। মেয়েদের সামনে নিজেকে স্মার্ট করে মেলে ধরতে চাই। কিন্তু কিভাবে হবে জানেন না। তাই আজকে আমি আপনাদের কাছে কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন তার কিছু টিপস নিয়ে এসেছি
- ভেবেচিন্তে কথাবার্তা বলুন
- মেয়েটির চরিত্র অনুযায়ী তার সাথে মজার কথা বলে তাদের মানসিক শান্তি দেওয়ার চেষ্টা করুন, যাতে তারা আপনার সাথেই কথা বলার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠে
- মেয়েটির সামনে নিজেকে পজিটিভ রাখুন
- অন্য ব্যক্তিকে সাহায্য করুন
- সর্বদা হাসিখুশি থাকুন
- মেয়েটির মনের ভাব বুঝে নিয়ে তার সাথে মেলামেশা করুন
- এমন ইনফর্মেশন গ্রহণ করুন, যেগুলো মেয়েটি জানে না।
- তার সাথে নতুন নতুন জিনিস নিয়ে আলোচনা করুন।
- নিজেকে স্টাইলিশ বানান।
নিজেকে স্মার্ট করবেন তার সেরা ১০টি অভ্যাস
কথায় আছে মানুষ অভ্যাস এর দাশ। আপনার প্রতিদিনের অভ্যাস আপনাকে স্মার্ট হওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে। যাইহোক, মনে রাখবেন, যা কিছুর আপনার জন্য কাজ করতে পারে তা অন্যদের জন্য কাজ নাও করতে পারে। নিজেকে স্মার্ট করে তুলতে নিচের অভ্যাস গুলো আপনার অভ্যাসে পরিণীত করুন।
আরও পরুনঃ কিভাবে YouTube- থেকে অর্থ উপার্জন করবেন
নিজেকে স্মার্ট করার জন্য আপনার দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নিচে ১০টি অভ্যাস দেওয়া হলোঃ
১. ভালো বই পড়ুন
বই পড়ুন জ্ঞান অর্জন করুন। ভালো বই পড়া আপনাকে নতুন বিষয়গুলির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারে যা আপনার নিউরাল পথগুলিকে উদ্দীপিত করে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। আপনি আপনার শেল্ফ থেকে একটি বই ধরুন, আপনার ফোনে একটি রিডিং অ্যাপ ডাউনলোড করে রাখতে পারেন বা লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়ুন।
আপনি উভয়ই নতুন তথ্য শিখবেন এবং আপনার শব্দভান্ডার বাড়াবেন। যা আপনার জীবনে পরিবর্তন করে সাহয্য করবে।
২. স্মার্ট লোকেদের সাথে সময় কাটানো
স্মার্ট লোকেদের সাথে সময় কাটানো আপনাকে জাদুকরীভাবে স্মার্ট করে তুলবে না। যাইহোক, এটি আপনাকে এমন ব্যক্তিদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করবে যারা আপনাকে শেখা চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে। নিজেকে নতুন মতামত এবং দৃষ্টিভঙ্গির কাছে প্রকাশ করা আপনাকে আরও চিন্তা করার সুযোগ দেবে। কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন তার জন্য এটি একটি আদর্শ পদ্ধতি।
৩. প্রতিদিন ব্যায়াম শুরু করুন
অনেক গবেষণায় দেখা যায় যে শারীরিক ব্যায়াম এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতার মধ্যে একটি শক্তিশালী সংযোগ রয়েছে। আপনি যখন শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকেন, তখন আপনার হিপ্পোক্যাম্পাসে কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায় - আপনার মস্তিষ্কের অংশ যা নিউরনের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে।
এই নিউরন বৃদ্ধি তখন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে, যা স্মার্ট হওয়ার একটি দুর্দান্ত উপায়। আপনি আপনার শহরের ম্যারাথনের জন্য সাইন আপ করুন বা প্রতিদিন ৩০ মিনিটে দোড় শুরু করুন, কারণ যেকোনো ধরনের ব্যায়াম অবশ্যই আপনাকে আরও স্মার্ট করতে সাহায্য করবে।
৪. নতুন ভাষা শিখুন
একাধিক ভাষায় কথা বলা আপনার জ্ঞানীয় ক্ষমতা অনুশীলন করে এবং আপনি কতটা ভালভাবে মাল্টিটাস্ক করতে পারেন তা উন্নত করে। এর কারণ হল ভাষাগুলির মধ্যে স্যুইচ করার জন্য প্রচুর ঘনত্ব, ফোকাস এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণ লাগে।
আরও পরুনঃ কিডনির পাথর দূর করার ৮টি ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপায়
আসলে, কিছু গবেষণা দেখায় যে দ্বিভাষিক লোকেরা আমাদের বাকিদের চেয়ে বেশি স্মার্ট। তাই আপনি যদি জানতে চান কিভাবে স্মার্ট হতে হয়, তাহলে আপনার নিকটতম ভাষার ক্লাসে যোগ দিন কারণ এটি একটি দুর্দান্ত উপায়।
৫. আপনার স্ক্রীন টাইম কম করুন
আপনি যদি প্রতিদিন আরও স্মার্ট হতে চান, তাহলে আপনার স্ক্রীন টাইম ট্র্যাক করে শুরু করুন। গবেষণায় দেখা গেছে যে অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার জ্ঞানীয় কর্মক্ষমতার জন্য ক্ষতিকর। স্ক্রীন টাইম সীমা সেট করতে একটি অ্যাপ ব্যবহার করার চেষ্টা করু।
আপনি আপনার ফোন থেকে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলি মুছে ফেলতে পারেন বা প্রাতঃরাশের পরে আপনার ফোন ব্যবহার না করার একটি প্রতিদিনের অভ্যাস তৈরি করতে পারেন, উদাহরণস্বরূপ।
৬. ধ্যান অনুশীলন করুন
মেডিটেশন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং এটি মানসিক বুদ্ধিমত্তা বাড়ানোর জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। আপনি যদি ব্যস্ত বা অভিভূত বোধ করেন তবে একটি ধ্যান অনুশীলন আপনাকে আপনার শরীর এবং আপনি কেমন অনুভব করছেন সেদিকে মনোযোগ দিতে পারবেন।
এটি, চাপ এবং উদ্বেগ পরিচালনা করার জন্য ধ্যান ব্যবহার করার পাশাপাশি, ফোকাস করতে এবং নতুন দক্ষতা শেখার জন্য আপনার মস্তিষ্কে জায়গা খালি করতে পারে।
৭. সর্বদা শান্ত মনে থাকুন
নিজেকে দিবাস্বপ্ন দেখার অনুমতি দেওয়া এবং সৃজনশীলভাবে চিন্তা করা আপনাকে তথ্য প্রক্রিয়া করতে এবং ধারণাগুলি সংযুক্ত করতে সহায়তা করতে পারে। কখনও কখনও আমরা নিজেদেরকে খুব সমালোচনামূলক বা গুরুত্ব সহকারে ভাবতে বাধ্য করি। পরিবর্তে, আমরা যখন আমাদের মনকে শিথিল করি এবং নিজেদেরকে সৃজনশীলভাবে চিন্তা করতে দিই, তখন এটি আমাদের মস্তিষ্ককে জিনিসগুলি পরিষ্কারভাবে মনে রাখতে উদ্দীপিত করতে পারে।
৮. সময়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে চলুন
সময় এর সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া ও আপডেট করাও স্মার্টনেস এর একটা উদহারন। সব সময় সবকিছুকে পজিটিভ ভাবে নিয়ে সেগুলোকে ঠান্ডা মাথায় হ্যান্ডেল করাও একটা স্মার্টনেস এর অংশ। যুগের সাথে মস্নিয়ে নেওয়া।
৯. জামাকাপড়ের Sense রাখুন
আপনি কেমন স্মার্ট ও কেমন চরিত্রের এবং কেমন পরিবেশ থেকে এসেছেন সেটা আপনার পোশাক দেখে ও চুল কাটিং দেখে অনেকটায় বুঝে যাবে। তাই নিজের সাথে মানান সই পোশাক পরিধান করতে হবে। মাথার চুলে ভদ্র কাট দিতে হবে।
১০. অন্যদের ছোট করা থেকে বিরত থাকুন
লেখকের শেষ কথা
উপরের আলোচনায় আমরা চেষ্টা করেছি আপনি কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন সেটা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছি। স্মার্ট হওয়ার অনেক উপায় আছে সেগুলো ভিতর থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপায় তুলে ধরেছি আশা করি সেগুলো আপনার উপকারে আসবে। এবং আপনি নিজেকে স্মার্ট করে সমাজের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারবেন।
আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং উপকারে আসে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। সময় উপযোগী বিভিন্ন তথ্য পেতে আমাদের নিয়মিত ভিজিট করুন এবং ফলো দিয়ে পাসে থাকুন। ধন্যবাদ🖤
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url